43102

সুদানে যুদ্ধ বন্ধে সৌদিতে আলোচনায় বসবেন দুই জেনারেল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সুদানে এখন প্রতিদিনই আতঙ্ক, মৃত্যুভয়। সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) লড়াইয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজধানী খার্তুম। থেমে থেমেই ট্যাংক, গোলাবারুদ বিমান হামলায় কেঁপে কেঁপে উঠছে খার্তুমের জনপদ।

ক্ষমতা দখল দ্বন্দ্বের টানা ১৮ দিনের মাথায় শোনা গেল, যুদ্ধ বন্ধের হাওয়া লেগেছে সুদানে। শিগগিরই আলোচনায় বসছেন দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান ও আরএসএফ জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালোস। দুই জেনারেলের প্রতিনিধিরাও থাকবেন আলোচনায়।

ads

মঙ্গলবার মিসরীয় নিউজ চ্যানেল আল-কাহেরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রানজিশনাল সোভেইরিন কাউন্সিলের সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল শামস আল-দিন আল-কাব্বাশি বেশ জোর দিয়েই এ কথা বলেছেন।

সৌদি আরবসহ আঞ্চলিক দেশগুলোর মধ্যস্থতায় অনুষ্ঠিতব্য জেদ্দার ওই আলোচনায় সুদানের যুদ্ধবিরতি এবং মানবিক প্রয়োজনের ওপর আলোকপাত করা হবে। গত সপ্তাহে সুদানের জাতিসংঘ দূত ভলকার পেরেটজ জানিয়েছিলেন, উভয়পক্ষই আলোচনার জন্য প্রস্তুত। আসন্ন আলোচনার জন্য ইতোমধ্যেই তারা প্রতিনিধি মনোনীত করেছে। শুরুর দিকে সৌদি আরবের জেদ্দা অথবা দক্ষিণ সুদানের জুবায় আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তখন দাগালোর সাথে আলোচনায় বসতে অসম্মতি জানিয়েছিলেন বুরহান। অন্যদিকে দাগালো জানিয়েছিলেন সেনাবাহিনী শত্রুতা বন্ধ না করা পর্যন্ত তিনি আলোচনায় বসবেন না।

ads

গত সপ্তাহের শেষ দিন পর্যন্তও এমনই ছিল দুই জেনারেলের সিদ্ধান্ত। ১৫ এপ্রিল থেকে সুদানে সেনা ও আধাসেনা বাহিনীর মধ্যে চলছে ক্ষমা দখলের লড়াই। দুই জেনারেলের সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন অনেক বেসামরিক নাগরিক। দলে দলে দেশ ছাড়ছেন বাসিন্দারা। খাদ্য, বিদ্যুৎ ও পানির ঘাটতিতে দিন কাটাতে হচ্ছে অনেককে। ওষুধ-রক্ত-অক্সিজেনের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে হাসপাতালও। একটি বড় শরণার্থী সংকট এড়াতে শুরু থেকেই সুদানে জরুরি শান্তি প্রচেষ্টার চেষ্টা করে আসছে জাতিসংঘ। কিন্তু বারবারই ব্যর্থ হয়েছে। বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য প্রতিবেশী দেশগুলোকে সীমান্ত খোলা রাখার আহ্বান জানিয়েছে।

পালিয়েছে ৪ লাখ ৩০ হজার মানুষ: জাতিসংঘ
ক্ষমতার লড়াইয়ে উত্তপ্ত সুদান ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে প্রায় চার লাখ ৩০ হাজার মানুষ। লড়াইয়ের তৃতীয় সপ্তাহে খার্তুমে দেখা দিয়েছে মানবিক সংকট। ইতোমধ্যেই এক লাখ মানুষ সুদান সীমান্ত পেরিয়ে পালাতে সক্ষম হয়েছে। অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় তিন লাখ ৩০ হাজার মানুষ।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)-এর সমীক্ষা অনুযায়ী দুই জেনারেলের দ্বন্দ্বে চলমান অস্থিরতা থেকে বাঁচতে প্রতিবেশী দেশগুলোতে পাড়ি জমাতে পারে প্রায় আট লাখ মানুষ। এদের মধ্যে প্রায় ৭২ শতাংশ অর্থাৎ দুই লাখ ৪০ হাজার পালাচ্ছে দক্ষিণ দারফুর ও পশ্চিমের দেশগুলোতে। যেখানে সুদানের প্রতিবেশী দরিদ্র দেশগুলোর দুই-তৃতীয়াংশই বিদেশি সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল সেখানে দেশগুলোতে শরণার্থীদের অবস্থান সার্বিক অবস্থাকে আঞ্চলিক সংকটে রূপান্তরিত করবে। ডব্লিউ এফপির ডানফোর্ড রয়টার্সকে বলেছেন, ‘যদি আমরা লড়াই বন্ধ না করি, এখনোই না থামাই, মানবিকভাবে এর প্রভাব গুরুতর হতে চলেছে।’

ad

পাঠকের মতামত