37929

আল-আজহারের শায়খের জানাজায় লাখো মুসল্লি

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ বিশ্বখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী শরিয়াহ সাবেক প্রধান শায়খ ড. উসামা আবদুল আজিম ইন্তেকাল করেছেন। গত সোমবার (৩ অক্টোবর) মারা যান মিসরীয় প্রবীণ এ আলেম। তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বিশ্বের নানা দেশের ইসলামী ব্যক্তিত্বরা।

আলজাজিরা মুবাশির সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) কায়রোর দক্ষিণাঞ্চলীয় আবাজিয়া এলাকার আল-মুওয়াসালা মসজিদে শায়খ উসামার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

ads

জানাজায় উপস্থিত হয়ে তাঁকে বিদায় জানান লাখো মুসল্লি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর জানাজার চিত্র ব্যাপক ভাইরাল হয়।

মিসরের সাবেক আওকাফ বিষয়ক মন্ত্রী ড. মুহাম্মদ আল-সাগির জানান, আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরেও শায়খ উসামা আবদুল আজিমের শিক্ষার প্রভাব ছিল খুবই ব্যাপক। পবিত্র কোরআনকে ভালোবাসাই ছিল তার শিক্ষার মূল উপাদান। হিফজকে তিনি একজন মুসলিমের প্রধান কর্তব্য বলে মনে করতেন। মানুষের কাছে আল্লাহর নির্দেশনা ও রাসুল (সা.)-এর সুন্নাহ অনুসরণের অনুপ্রেরণা ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ছিলেন সবার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ও দ্বিনের আহ্বায়ক। আমাদেরকে তিনি সব সময় তার মসজিদের পাঠে অংশ নিতে বলতেন। তাঁর ব্যতিক্রমধর্মী দরস ও পাঠদান পদ্ধতি ছিল খুবই উপভোগ্য।

ads

মিসরীয় আলেম ও দায়ি হাতিম আল-হুয়াইনি টুইটারে বলেন, ‘হে আল্লাহ, আপনার বান্দা দুনিয়া ত্যাগ করেছেন। তিনি মসজিদের মেহরাবকে পুরো জীবন আঁকড়ে ধরে রেখেছিলেন। আপনি তাঁর কবরকে জান্নাতের টুকরো করে দিন। ’

প্রখ্যাত মিসরীয় দায়ি আবদুল্লাহ রুশদি শোক জানিয়ে টুইট বার্তায় বলেন, সালাফের উত্তরসূরী প্রখ্যাত আলেম ইন্তেকাল করেছেন। তিনি ছিলেন আল্লাহভীতি ও দুনিয়াবিমুখতার উৎকৃষ্ট নমুনা। সুন্নাহ অনুসরণে তিনি ছিলেন অবিচল। আল্লাহর কাছে প্রার্থনায় খুবই অনুনয়-বিনয় করে কান্নাকাটি করতেন তিনি। দীর্ঘ সময় ধরে রাতের নামাজে পড়তেন তিনি। মানুষকে দ্বিনের শিক্ষা দিতেন।

উল্লেখ্য, ড. উসামা আবদুল আজিম ১৯৪৮ সালে মিসরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৯ সালে তিনি আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শরিয়াহ বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন এবং পরবর্তীতে উসুল ফিকাহ বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেন। ১৯৭৬ সালে পুনরায় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতক করেন। উসলুল ফিকাহ বিষয়ে তিনি পিএইডি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী শরিয়াহ বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

ইবাদাত ও কোরআন তিলাওয়াতে একনিষ্ঠতার জন্য তিনি ‘আবিদুজ জামান’ বা যুগের আবেদ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাঁর শুভানুধ্যায়ীরা বলেছেন, তিনি মাগরিবের পর থেকে ফজরের নামাজ পর্যন্ত নামাজে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করতেন। এভাবে তিনি দুই হাজার চার শ বার পবিত্র কোরআন খতম করেছেন বলে মনে করা হয়। সূত্র : আলজাজিরা মুবাশির

ad

পাঠকের মতামত