36221

কুমিল্লায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

নিউজ ডেস্কঃ কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার নিমসার জুনাব আলী কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে ফেসবুক মেসেঞ্জারে অশালীন মেসেজ, ছবি ও অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগে অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবিতে বৃহস্পতিবার (১১ আগষ্ট) সকাল ১০ টা হতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে কলেজ প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা।

অভিযোগ উঠেছে, কলেজের অধ্যক্ষ একাদশ শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রীকে ফেসবুক মেসেঞ্জারে অশালীন মেসেজ ও অনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছে এবং এই ঘটনা কাউকে জানালে কলেজ হতে টিসি দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে। এই ঘটনা জানাজানি হলেই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে।

ads

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মামুন মিয়া মজুমদার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একাদশ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেয়। এই কথোপকথনের স্ক্রীনশট ছড়িয়ে গেলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে নানাভাবে হুমকি দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনা জানাজানি হলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একজন একাদশ শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ইয়াসিন আহমেদ বলেন, আমাদের এক সহপাঠীকে প্রিন্সিপাল স্যার ফেসবুকে অশ্লীল কথা বলছে। এই ঘটনার পর হতে প্রিন্সিপাল স্যারের স্ত্রীসহ অনেকেই ওরে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। ওরে কলেজ থেকে টিসি দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমাদের দাবি ওনাকে পদত্যাগ করতে হবে এবং দাবি না আদায় হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাস বর্জন করেছি।

ads

আন্দোলনরত ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সহপাঠী আমেনা আক্তার বলেন, আমাদের প্রিন্সিপাল স্যার আমাদের এক সহপাঠীকে বাজে কথা বলেছে। আমরা ওনার পদত্যাগ চাই। আমাদের সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব ওনার কিন্তু উনিই যদি এমন করে তাহলে আমরা কিভাবে কলেজে আসবো।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী (ভুক্তভোগীর নিরাপত্তা রক্ষায় নাম অপ্রকাশিত রাখা হলো) বলেন, স্যার সামাজিক মেসেঞ্জারে আমাকে খারাপ কথা বলে, এরপর আমি ওনাকে ওনার কলেজের শিক্ষার্থী বললে উনি আমাকে এসব কথা ফাঁস করতে না করে। উনি আমাকে উপবৃত্তি দিবে বলে, কলেজে ফ্রি পড়ানো সহ নানা প্রলোভন দেখায়। উনি আমার কাছে বাজে পিক চায় এবং নিজের বাজে ছবিও আমাকে পাঠায়। এরপর উনি আমাকে বলে এসব কাউরে বললে আমার কলেজ থেকে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে।

এদিকে, এই ঘটনার বিচার দাবিতে সকাল দশটা হতে কলেজে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এরপর সাড়ে ১১ টায় কলেজে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে তাদের শান্ত করার চেষ্টা চালায়। এসময় ইউএনও অনান্য শিক্ষক, অভিভাবক প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনায় বসেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হালিমা খাতুন জানান, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ ছামিউল ইসলামকে প্রধান করে ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে কমিটি শুনানি শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবে।

অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মামুন মিয়া মজুমদার বলেন, কিছু লোকজন মিলে তাকে কলেজ থেকে বিতাড়িত করার জন্য একটি সাজানো ঘটনা সৃষ্টি করেছে। ওই ছাত্রীকে তিনি কোন প্রকার যৌন হয়রানি বা অশ্লীল ছবি পাঠাননি।

ad

পাঠকের মতামত