35248

আমরা চাই বাবার গান সবাই করুক: আরমান খান

বিনোদন ডেস্কঃ কোনও শিল্পীর শারীরিক প্রস্থান ঘটলে জটিলতা তৈরি হয় তার রেখে যাওয়া সৃষ্টি নিয়ে। বেশিরভাগ সময় পরিবার বা কপিরাইট ইস্যুতে বাধা আসে। আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুর পর যেটি আরও প্রকট হয়ে ধরা দেয়। তবে এমন পরিস্থিতি এড়িয়ে গিয়ে বাবার মরদেহকে পাশে রেখেই অনন্য এক নজির সৃষ্টি করলেন সংগীত পরিচালক আরমান খান।

শুক্রবার (৮ জুলাই) বিকালে কিংবদন্তি সুরকার আলম খানের জানাজা হয় নগরের চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে। জানাজা হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে বড় ছেলে আরমান খান উপস্থিত সকল শিল্পী-সুরকার-গীতিকার-স্বজন ও সাংবাদিকদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। বলেন, তার বাবার কোনও আচরণে কেউ কষ্ট পেলে যেন ক্ষমা করে দেন।

ads

সঙ্গে যুক্ত করেন, ‘আমরা চাই বাবার রেখে যাওয়া গানগুলো সবাই কণ্ঠে তুলুক। কারণ, এভাবেই আমার বাবা বেঁচে থাকতে পারেন হাজার বছর। তাই এই বিষয়ে আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও আপত্তি থাকবে না। অনুরোধ শুধু এটুকু, গানের সুর ঠিক রেখে যে কেউ গাইতে পারেন। এমনকি রিমেকও করতে পারেন। ট্রিবিউট টু আলম খান- এমন অনুভূতি নিয়ে অ্যালবাম হোক, টিভি অনুষ্ঠান হোক, কনসার্ট হোক; ক্ষতি নেই তো। আর উনি তো সুর করেছেন এই দেশ ও মানুষের জন্য। উনার সৃষ্টি তো নির্দিষ্ট কারোর জন্য তৈরি হয়নি। বাবার পথ ধরে আমি নিজেও একজন সুরকার। তাই বলে আমি ভাবি না বাবার গান মানে আমার সম্পত্তি। উনার সৃষ্টি সবার। তবে সেটি অবশ্যই করতে হবে সঠিক সুরে সঠিক সম্মান প্রকাশের মাধ্যমে। এটুকুই আমাদের অনুরোধ।’

পুত্র হিসেবে আরমান খানের প্রত্যাশা, জীবদ্দশায় না পেলেও মরণোত্তর একুশে বা স্বাধীনতা পদক পেতে পারেন তার বাবা। তিনি বলেন, ‘যদিও উনি সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন, তবু আমরা মনে করি রাষ্ট্রীয়ভাবে তার আরও স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। এ নিয়ে আমাদের আক্ষেপ বা অনুযোগ নেই। তবে এখনও যদি সেই সম্মাননা দেওয়া হয়, আমরা খুশি হবো।’

ads

শুক্রবার (৮ জুলাই) বেলা ১১টা ৩২ মিনিটে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন কিংবদন্তি সুরস্রষ্টা আলম খান। ২০১১ সালে তার ফুসফুসে ক্যানসার ধরা পড়ে।

এদিন বিকাল সাড়ে ৫টায় আলম খানের প্রথম জানাজা হয় চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে। এরপর মরদেহ ঢাকা থেকে নিয়ে যাওয়া হবে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পাহাড়ের চূড়ায় নির্মিত মসজিদুল আউলিয়া হজরত খাজা শাহ মোজাম্মেল হক (রা.) প্রাঙ্গণে। সেখানে শনিবার (৯ জুলাই) জান্নাতুল ফেরদৌস কমপ্লেক্সে স্ত্রীর কবরের পাশেই শায়িত করা হবে আলম খানকে।

আলম খানের সৃষ্টি অসংখ্য গানের মধ্যে কয়েকটি হলো- ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘আমি রজনীগন্ধা ফুলের মতো’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘কি জাদু করিলা’, ‘ওরে নীল দরিয়া’, ‘তুমি যেখানে আমি সেখানে’, ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘ভালোবেসে গেলাম শুধু’, ‘চাঁদের সাথে আমি দেবো না’, ‘আমি একদিন তোমায় না দেখিলে’, ‘সাথীরে যেও না কখনো দূরে’, ‘কাল তো ছিলাম ভালো’, ‘চুমকি চলেছে একা পথে’, ‘তেল গেলে ফুরাইয়া’ প্রভৃতি।

ad

পাঠকের মতামত