29024

অভিনেতা ড. ইনামুল হক আর নেই

নিউজ ডেস্ক: একুশে পদকপ্রাপ্ত দেশবরেণ্য অভিনেতা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ড. ইনামুল হক আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।

সোমবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ড. ইনামুল হকের মেয়ে হৃদি হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ads

হৃদি জানান, তার বাবা আজ বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন৷ তখনই তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়৷ সেখানে পৌঁছানোর পর চিকিৎসকরা ইনামুল হককে মৃত ঘোষণা করেন৷

ইনামুল হক একাধারে অভিনেতা, নাট্যকার, নির্দেশক ও শিক্ষক হিসেবে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে জায়গা করে নিয়েছিলেন। তার পুরো পরিবারই নাটকের সঙ্গে জড়িত। ইনামুল হকের দাম্পত্য সঙ্গী বরেণ্য নাট্যজন লাকী ইনাম। তাদের সংসারে দুই মেয়ে হৃদি হক ও প্রৈতি হক। হৃদির স্বামী অভিনেতা লিটু আনাম, আর প্রৈতির স্বামী অভিনেতা সাজু খাদেম।

ads

১৯৪৩ সালের ২৯ মে ফেনী সদর উপজেলার মোটবী ইউনিয়নে জন্ম হয় ইনামুল হকের। বাবার নাম ওবায়দুল হক ও মা রাজিয়া খাতুন।

ফেনী পাইলট হাইস্কুল থেকে এসএসসি, ঢাকার নটর ডেম কলেজ থেকে এইচএসসি এবং পরবর্তীকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ থেকে তিনি অনার্স ও এমএসসি সম্পন্ন করেন। এরপর ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন ইনামুল হক।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি দীর্ঘ ৪৩ বছর শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত থাকার সময় ১৫ বছর রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান এবং দুই বছর ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

নটরডেম কলেজে পড়ার সময় প্রথম মঞ্চে অভিনয় করেন ইনামুল হক। ফাদার গাঙ্গুলীর নির্দেশনায় তখন তিনি ‘ভাড়াটে চাই’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন।

১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়’র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন ইনামুল হক। দলটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এই দলের হয়ে প্রথম তিনি মঞ্চে অভিনয় করেন আতাউর রহমানের নির্দেশনায় ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রো’ নাটকে।

এরপর এই দলের হয়ে ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’, ‘নূরুল দীনের সারা জীবন’সহ বহু নাটকে অভিনয় করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি এই দল থেকে বের হয়ে প্রতিষ্ঠিত করেন ‘নাগরিক নাট্যাঙ্গন’। সবশেষ দলটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন গুণী এই নাট্যজন।

দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০১২ সালে একুশে পদক এবং ২০১৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন।

ad

পাঠকের মতামত