23830

ইরানের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: হাসান রুহানির পর ইরানের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন ইব্রাহিম রাইসি। শুক্রবার দেশজুড়ে ভোটগ্রহণের পর প্রাথমিক গণনা এমন তথ্যই দিচ্ছে।

ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব টেলিভিশন চ্যানেলের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, দেশটিতে মোট ভোটারের সংখ্যা বর্তমানে ৫ কোটি ৯০ লাখ। তাদের মধ্যে শুক্রবার ভোট দিয়েছেন প্রায় ৩ কোটি ভোটার।

ads

ইতোমধ্যে ১ কোটি ৮০ লাখ ভোট গণনা করা হয়েছে। দেখা গেছে, গণনাকৃত ভোটগুলোর মধ্যে ৬২ শতাংশ ভোটই পেয়েছেন রাইসি।

ইরানের চলতি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থিতার আবেদন করেছিলেন প্রায় ৬০০ জন, তাদের মধ্যে ৪০ জন ছিলেন নারী; কিন্তু দেশটির ক্ষমতাসীন কট্টরপন্থি সরকারের প্রভাবপূর্ণ সংগঠন গার্ডিয়ান কাউন্সিল রাইসিসহ ৭ জন ছাড়া অন্যান্য সবার প্রার্থিতা বাতিল ঘোষণা করে। এই সাত জনের মধ্যে তিনজন নির্বাচনের আগেই প্রার্থিতার আবেদন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় শেষ পর্যন্ত প্রার্থী থাকেন ৪ জন।

ads

সেই অনুযায়ী চলতি বছর দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামা প্রার্থীরা হলেন ইব্রাহিম রাইসি, আবদুল নাসের হেমাতি, মহসিন রেজাই ও আমির হোসেন ঘাজিজাদ্দেহ হাসেমি।

৬০ বছর বয়সী ইব্রাহিম রাইসি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগে ইরানের বিচার বিভাগের প্রধান ছিলেন। সেই হিসেবে নির্বাচনের আগে থেকেই তিনি দেশটির ক্ষমতাসীন সরকারের বেশ প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত।

ইরানের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লা খামেনির বিশেষ আস্থাভাজন রাইসির জন্ম দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় শহর মাশহাদে। খামেনিও একই শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

খামেনির মতো রাইসিরও দাবি, ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হযরত মুহম্মদ (সঃ) এর রক্তসম্পর্কিত উত্তরাধিকার রয়েছে তার। এ কারণে সবসময় কালো রংয়ের পাগড়ি পরেন তিনি।

নিজেকে ‘দুর্নীতি, অদক্ষতা ও অভিজাতদের’ ঘোর বিরোধী হিসেবে জাহির করা রাইসি রাজনৈতিক দিক থেকে শিয়া ইসলামী কট্টরপন্থার সমর্থক। খামেনির মতো না হলেও দেশটির সংখ্যাগুরু শিয়া সম্প্রদায়ের কট্টরপন্থিমহলে তার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা ব্যাপক।

তবে ইরানের গণতন্ত্রপন্থি বলয়ে তার জনপ্রিয়তা বেশ কম। কারণ, আশির দশকে ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় দেশটিতে তৎপর হয়ে উঠেছিলেন গণতন্ত্রপন্থিরা, যারা ক্ষমতাসীন ইসলামী কট্টরপন্থি সরকারের বিরোধী। যুদ্ধ শেষে রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতার কারণে শত শত গণতন্ত্রপন্থিকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তেহরানের রেভ্যুলুশনারি আদালত সংক্ষিপ্ত বিচারকাজের পরই তাদের অধিকাংশকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়। সে সময় রেভ্যুলুশনারি আদালতের প্রধান বিচারক ছিলেন রাইসি।

ওই বিচার প্রক্রিয়ার পরই খামেনির আস্থাভাজন হিসেবে হিসেবে উত্থান ঘটে তার। ইরানের শাসনতন্ত্র অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি। প্রথম অবস্থানে আছেন দেশটির শীর্ষ আধ্যাত্মিক নেতা।

ইরানের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ও অন্যান্য প্রার্থীরা ইতোমধ্যে রাইসিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এখন শুধু খামেনির অনুমোদনের অপেক্ষা। সেই অনুমোদন পেলেই আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের প্রেসিডেন্টের পদে অভিষিক্ত হবেন তিনি।

ad

পাঠকের মতামত